জাতির পিতা সম্পূর্ণ নতুন একটি পরিভাষা। পৃথিবীতে জাতিরাষ্ট্রের জন্মের পর থেকে এই পরিভাষাটির ব্যবহার শুরু হয়। যে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠায় যে ব্যক্তির অবদান সবচেয়ে বেশি, সেই রাষ্ট্রে তাকে ‘জাতির পিতা’ বলা হয়। যেমন ভারতে মহাত্মা গান্ধী এবং পাকিস্তানে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহকে জাতির পিতা বলা হয়।
সাধারণত অন্যান্য দেশে এই ব্যক্তিরা মোটা দাগে পুরো জাতির কাছে বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকেন। তাদের নিয়ে খুব একটা সমালোচনা হয় না এবং তারা পুরো জাতির সম্মানের পাত্র হয়ে থাকেন।
কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অবস্থা ভিন্ন। বাংলাদেশে যাকে জাতির পিতা বলা হয়, তাকে শুধু তার দলই জাতির পিতা বলে, অন্যান্য দল তা মানতে প্রস্তুত নয়। হয়তোবা তিনি নিজের কর্মকাণ্ডের কারণে অন্যান্য দলের কাছে সেই আস্থা ও সম্মানটুকু হারিয়েছেন।
এখন কথা হলো, বাংলাদেশে জাতির পিতার বিকল্প হিসেবে আমরা কি হজরত ইব্রাহিম (আ)কে দাঁড় করাতে পারি? তার উত্তর হলো, না। কারণ হজরত ইব্রাহিম (আ) বাংলাদেশি/বাঙালি জাতির পিতা নন, আর এখানে এ অর্থেই জাতির পিতা বলা হচ্ছে।
কুরআনে কারীমের সূরা হজ্বের ৭৮ নম্বর আয়াতে মূলত সাহাবায়ে কেরামকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে, “তোমাদের পিতা ইব্রাহিমের মিল্লাতের অনুসরণ করো।”
হজরত ইব্রাহিম (আ) শুধু সাহাবায়ে কেরামের নন, বরং পুরো আরব জাতির, এমনকি বনী ইসরাইলেরও বংশগত পূর্বপুরুষ ছিলেন। এ অর্থেই উক্ত আয়াতে তাঁকে সাহাবায়ে কেরামের পিতা বলা হয়েছে।
(দেখুন: তাফসিরে কুরতুবি, তাফসিরে বাগাভি, সংশ্লিষ্ট আয়াত)
লেখক: মাওলানা উমর ফারুক
Leave a Reply