পোশাক কেন্দ্রিক ধার্মিকতা

পোশাক কেন্দ্রিক ধার্মিকতা
Moderator Avatar

পোশাক কেন্দ্রিক ধার্মিকতা একটা হাস্যকর জিনিস। ইসলামে ধর্মীয় পোশাক বলতে কিছু নাই। ইসলামি পোশাক বা সু্ন্নতি পোশাক বলতে কিছুর অস্তিত্ব আসলে নাই। পোশাক মানুষ পরে আবহাওয়া, পরিবেশ হিসেবে। তাই পৃথিবীতে অঞ্চল ভেদে পোশাকের ধরণ ভিন্ন ভিন্ন। ইসলামের আবির্ভাব যখন আরবে হয়েছিলো, আরবের সাধারণ মানুষের পোশাক পরেই ইসলামের যাত্রা শুরু হয়েছে। ইসলাম সেখানে নতুন কোন কথিত ‘ইসলামি পোশাক’ আমদানি করেনি। রাসুল সা. ও তার সাহাবিদের পোশাকের সাথে মক্কার মুশরিকদের পোশাকের বড় কোন পার্থক্য ছিলো না। রাসুল সা. ও তার সাহাবিদেরও সবার পোশাক একরকম ছিলো না। রাসুল সা. সারা জীবন এক ধরণের পোশাকও পরেননি। নানান সময়ে নানান ধরণের পোশাক পরেছেন। তাঁর কাছে শামের খৃষ্টানদের তরফ থেকে উপঢৌকন হিসেবে জুব্বা আসলে সেটা তিনি পরেছেন এমন বর্ণনা পাওয়া যায়।

রাসুল সা. এর ওফাতের পর ইসলাম যখন বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়লো, তখন বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন পোশাক পরেই ইসলাম পালন করেছে। ইসলাম তাদের সবার উপর কোনো একক ইসলামি পোশাক আবশ্যক করে দেয় নি। আরব, ইরানি ও তুর্কি মোসলমানদের পোশাক সব সময় আলাদা ছিলো। দেখেই চিনে ফেলা যেতো কে আরব আর কে তুর্কি। আব্বাসীয় খেলাফত আমলে সেনাবাহিনীর মধ্যে আরব, ইরানি ও তুর্কিদের আলাদা ইউনিট ছিলো। প্রত্যেক ইউনিটের পোশাক আলাদা আলাদা ছিলো।

কথাগুলো বললাম কারণ দুইদিন ধরে দেখছি আমাদের ফেসবুক ধর্মবেত্তাগণ একজনের পোশাক নিয়ে নানান ধরণের কথা বলছেন। আজকে দেখলাম একজন লিখেছেন, ‘ইসলামে পাঞ্জাবি পরিধান করা সুন্নত করা হয়েছে’। অথচ পোশাকটার নাম এসেছে পাঞ্জাব থেকে। এই পাঞ্জাব এর পোশাক পাঞ্জাবি পরিধান করা নাকি ইসলামে সুন্নত করা হয়েছে!

লেখক: শায়খ ফারুক ফেরদৌস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *