যৌনতা সম্পর্কে তিন ভাবে আলোচনা করা যেতে পারে।
১. যৌন বিজ্ঞান
৩. যৌন নৈতিকতা
যৌন বিজ্ঞান মূলত যৌন রোগ নিয়ে আলোচনা করে। যৌন মনোদর্শন আলোচনা করে যৌনতার মনস্তাত্ত্বিক দিক সম্পর্কে এবং যৌনতার নীতি-নৈতিকতা সম্পর্কে আলোচনা করে যৌন নৈতিকতা।
সমকামিতা একটি বিকৃত যৌনাচার। যৌন বিজ্ঞান ও মনোদর্শনের মতে সমকামিতা জন্মগত অথবা অভ্যাসগত হতে পারে। সমকামিতা যদি জন্মগত হয় তাহলে এটি একটি রোগ হিসেবে বিবেচিত হবে। কেউ যদি এইডস রোগে আক্রান্ত হয় অথবা এই রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে তাহলে আমরা তাকে রোগী হিসেবে বিবেচনা করি। কেউ মানসিকভাবে নিজেকে সমকামী মনে করলে তার উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া। জন্মগতভাবে সমকামী হওয়ার অজুহাত দিয়ে সমকামিতার মতো একটি বিকৃত যৌনাচারকে স্বীকৃতি দেয়া যৌন নৈতিকতার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। নারী এবং পুরুষের একে অপরের প্রতি স্বাভাবিক যৌন আকর্ষণ রয়েছে। এটি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তির অংশ। কিন্তু কেউ যদি যিনা-ব্যভিচার লিপ্ত হয় তাহলে এটি অবৈধ হিসেবেই বিবেচিত হবে।
সমকামিতার ক্ষেত্রেও ঠিক একই কথা প্রযোজ্য। কেউ যদি বলে সে জন্মগতভাবে সমকামী তাহলে তার উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া কারন এটি একটি রোগ। কেউ যদি অভ্যাসগতভাবে সমকামিতায় লিপ্ত হয় তাহলে এটি যৌন মানসিক বিকৃতি হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এটিও একটি মানসিক ব্যাধি। তাছাড়া যৌনতার ক্ষেত্রে নৈতিকতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরী। যৌন নৈতিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে সমকামিতা সকল যুগেই একটি অবৈধ যৌন কার্যকলাপ হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে।
পবিত্র কুরআনেও এ বিষয়ে মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে।
বলা হয়েছে:
‘‘তোমরা কামতৃপ্তি মেটানোর জন্য নারীদের ছেড়ে পুরুষদের কাছে গমন করছো! (বাস্তবতা হচ্ছে, তোমরা শুধু উল্টো স্বভাবেরই নও) বরং তোমরা সীমা অতিক্রমকারী সম্প্রদায়।’’
সূরা আরাফ ৮১
‘‘লুতকেও আমি বিচারশক্তি ও জ্ঞান দান করেছিলাম এবং তাকে ঐ জনপদ থেকে উদ্ধার করেছিলাম যেখানকার লোকেরা অশ্লীল কাজে লিপ্ত ছিলো। প্রকৃতপক্ষে এরা ছিলো খুবই নিকৃষ্ট ও অবাধ্য লোক।’’
সূরা আম্বিয়া ৭৪
‘‘(আল্লাহর বান্দারা), তোমরা কি (কামপ্রবৃত্তি পূরণের জন্য) পৃথিবীর মানুষের মধ্যে পুরুষদের কাছে যাও? আর তোমাদের প্রভু তোমাদের জন্য যে স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন তাদের ত্যাগ করো? না, (এটা কোনো মামুলি ব্যাপার নয়), আসলে তোমরা এমন এক সম্প্রদায় যারা সীমা অতিক্রম করেছ।’’
সুরা শুয়ারা ১৬৫-১৬৬
ইসলাম আমাদের সামগ্রিকভাবে পরিশুদ্ধ করতে চায়। যৌনতার ক্ষেত্রেও ইসলাম চায় আমরা পবিত্র পথ অবলম্বন করি। নারী এবং পুরুষ বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে নিজেদের যৌন চাহিদা পূরণ করবে এটাই পবিত্র পদ্ধতি। এই পদ্ধতি ব্যতীত অন্য কোনো পদ্ধতিতে যৌন চাহিদা পূরণ করা ইসলামে বৈধ নয়।
ড: শেহজাদ সেলিমের প্রবন্ধের আলোকে
অনুবাদ: আল মানার ইনস্টিটিউট
Leave a Reply