অমুসলিমরা ভালো কাজ করলে কি জান্নাতে যেতে পারবে?

অমুসলিমরা ভালো কাজ করলে কি জান্নাতে যেতে পারবে?
Moderator Avatar

উত্তর: একথা আমাদের সকলের মনে রাখা ও মেনে চলা প্রয়োজন যে, পৃথিবীতে মানুষের ঈমান ও কুফরের এবং জান্নাত ও জাহান্নামের ফয়সালা করার কোনো অধিকার আমাদের নেই। যে মৌলিক উসুলের উপর ভিত্তি করে মানুষের জান্নাত ও জাহান্নামের ফয়সালা করা হবে তা আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলে দিয়েছেন। আমি বা আমরা বড়জোর মানুষদেরকে কুরআনের সে কথা শুনাতে পারি।

মহান আল্লাহ কুরআনে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন যে, একজন ব্যক্তিকে যতোটুকু জ্ঞান দেয়া হবে এর আলোকে তার ফয়সালা করা হবে।আপনি যদি মনোযোগ সহকারে সূরা আরাফ পড়েন তাহলে  এই বিষয়টি বুঝতে পারবেন। আমি এখানে সারমর্ম পেশ করছি।

আল্লাহ সেখানে এটা বোঝাতে চাচ্ছেন যে, কিয়ামতের দিন এমন কিছু মানুষ থাকবেন যারা বলবেন  “আমাদের নিকট কোনো পয়গম্বর আসেনি! আমরা তাদের সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। আমরা এমন স্থানে জন্মগ্রহণ করেছিলাম যেখানে আমাদের বাপ-দাদা বা পূর্বপুরুষগণের নিকট কোনো পয়গম্বর আসেনি। তাই ইসলামের বাণীও পৌঁছায়নি। তাহলে হে পরওয়ারদেগার! আমাদেরকে কেন পাকড়াও করেছেন ?”

এর জবাবে মহান আল্লাহ তখন বলবেন, “তোমাদের ফিতরাতে (স্বভাবজাত প্রবৃত্তি) আমি যে জ্ঞান দিয়েছিলাম তার ভিত্তিতে তোমাদের জবাব নেয়া হচ্ছে। আমি তোমাদের পয়গম্বরদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছি না।”

এজন্য যার যতটুকু জ্ঞান তার জবাবদিহি ততটুকু। আপনার যতটুক জ্ঞান আপনার জবাবটি ততটুকু। মাদার তেরেসার কতটুকু জ্ঞান ছিলো তা আমি জানিনা। এর জন্য আমার কোনো অধিকার নেই এই বিষয়ে ফয়সালা করার।অন্তরের খবর মহান আল্লাহ জানেন। তাই ফয়সালা তিনিই করবেন। আর এই বিচার ফয়সালা এতটাই ন্যায় পরায়ণ হবে যে, আল্লাহ আলেছেন একটি খেজুরের বিচির মধ্যখানের ফাঁকা অংশ পরিমাণও কারো সাথে জুলুম করা হবে না। আল্লাহ সুবহানাতায়ালার একটি মূলনীতি হলো সৎকর্ম যা কেবল তার উদ্দেশ্যেই করা হয় তা তিনি গ্রহণ করবেন। আপনারা জেনে থাকবেন মাদার তেরেসাকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “আপনি এই মানবতার সেবা কেন করছেন?” জবাবে তিনি বলেছিলেন আমি এ কাজ শুধু স্রষ্টার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই করছি। সে জন্যই আমি সবসময় বলে থাকি, “মানুষের বিষয়ে কখনোই ফায়সালা দেয়া উচিত নয় যে, তিনি জান্নাতে যাবেন নাকি জাহান্নামে!”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *